এক
লকলক করে বেড়ে উঠতে থাকা লাউগাছের গোড়া
কেটে দিয়েছিল ব্লেড দিয়ে।
তারপর চট করে একটু মাটি দিয়ে জুড়ে দিয়েছিল
রোগা কাণ্ডটির দু’টি টুকরো।
কী আশ্চর্য জাদুতে কে জানে আরও দু’দিন
বেঁচেছিল গাছটা।
এখন মনে হচ্ছে
সময় নামের ওই কালো আলখাল্লা-পরা লোকটা
ওর রোগা কাণ্ডটাকে দু’টুকরো করে
দেওয়ার ঠিক পরেই
আমরা যদি খুঁজে পেতাম জীবনদায়ী মাটি,
সেফটাজিডাইমের একটা অ্যাম্পুল,
তাহলে হয়তো থাকত আরও কিছুদিন
ওই বুকফাটা আর্তনাদ, মা গো,
তোমার গলা চিরে বেরোত আরও দু’বছর পর।
দুই
যখন ইংরেজি ‘টি’ অক্ষরের মতো করে
কেটে ফেলা হয়েছিল তোমার উদর
তুমি কাঁদোনি।
যখন ‘ডান’ ভেবে একটা খুঁটির সঙ্গে
তোমাকে বেঁধে
পেটাচ্ছিল জনতা
তখনও তুমি কাঁদোনি।
জনশ্রুতি আছে তোমার হৃদয় ইস্পাত-নির্মিত।
সেই তুমি
একটা সামান্য কাগজ, একটা ডেথ সার্টিফিকেট,
তার আঘাতে কেঁদে ফেললে?
ছি!
তিন
থাকা আর না-থাকার মাঝে
জেগে থাকে একটা হাইফেন, সাদা খাতায়।
বাস্তবে, থাকা আর না-থাকার মাঝে
থাকে একটা হাসপাতালের বেড, সাকশন মেশিন,
স্যালাইনের স্ট্যান্ড, এয়ারবেড ও
কিছু অব্যবহৃত ওষুধ।
জামাকাপড়, বেশ কিছু।
থাকা আর না-থাকার মাঝে
থাকে সোনালি ফ্রেমে বাঁধানো একটা ফোটো
আর সেই ফোটো থেকে ছিটকে আসা
একটি স্মিত হাসি, দু’টি উজ্জ্বল চক্ষু।
সাদা খাতায় থাকা আর না-থাকার মাঝে
জেগে থাকে একটা হাইফেন
কিন্তু পৃথিবীতে
থাকা আর না-থাকার মাঝে থাকে
এক অতল সিন্ধু, তরঙ্গ, স্মৃতির।