পালক পতন মানে। ক্ষরণ সত্তায়
নিবেদিত ডানা, ঝরবেই।
আজ স্পর্শক্ষয়, দূরে মানুষ্য প্রান্তরে
মুছে গেছে সবুজ প্রীতির কোলাকুলি।
চরাচরে হাঁচির শব্দের ভূত – ভয়।
তবু নভোবন
মেঘের নিঃশ্বাসে
পৃথিবীতে নাম লিখে স্মরণ – বৃষ্টির।
মুখ মনে পড়ে। ভেজা ভেজা মুখ।
নিজের হাতের সঙ্গে
নিজের বৈরিতা, অবিশ্বাস।
যেন গুপ্তঘাত এক বিষের প্রলেপ
মাখিয়ে রেখেছি নিজে নিজে।
আমার আত্মার নিরাময়ঘন
ওইসব মুখের উদ্যানে জলগন্ধে
ধুয়ে যেতে থাকি। ভাবি,
আমি এক আদিম উদ্ভিদ। গুল্মলতা পরিচয়।
লতিয়ে উঠতে চাই গহনে গহনে চিরকাল।
ধূম্রল কুহক থেকে দূরে
মির্জা মান্নানের বাড়ি। বাড়ির উঠানে
সঙ্গরত পাখির ভুবন। কমলার
নরম পাতায় সূর্য দরদ ঢালছে।
যতদূর চোখ যায় ফসলের সবুজ স্বরাজ
দিগন্তের গীতল পশ্চিমে
উবু হয়ে আছে। যেন নামাজ পড়ছে।
দূর থেকে দেখা যায় গাছের তাওয়াফ।
মাঝে ওর ঘর। ঘরভর্তি গান।
যে গান লুকিয়ে রাখে পাখি
নিঝুম নীড়ের বুকে
একাকার সুরের পাতায়।
মানুষ মূলত গাছ; শূন্য বেয়ে ওঠে।
মৃত্যুবীজ পুঁতে রাখে জন্মের সময়।
মন হলো ডালপালা;
আকাশ অবধি
যার আঁকুপাঁকু।
বড়জোড় মেঘ দেখে;
বৃষ্টির নিকুঞ্জে মুখ ধোয়।
দূরের গ্রহের বুকে মাথা রেখে
ঘুমাতে পারে না।
পায়ের শেকড় এসে মানুষ জড়ায়।
ওইখানে সুখ;
হৃদয় প্রস্তুত হাতে হাতে।
আজ মির্জা মান্নান হাঁসের মাংস খেতে
ডাক দেয়। হৃদয়ের বাড়া ভাতে
ভালোবাসা ফেরাতে পারি না।
জাগ্রত আত্মার দিকে
লুফে নিই সকল দাওয়াত।
ওর বউ পরিবেশনার
অন্তঃস্থ বিদ্যায় গান ঢালে;
গানের শরীরে
পাখির প্রহর আমি খাই।
ভালোবাসা নিজেই খাদক।
তার পেটে হজম হয়েছি বারবার।