করপোরেট জীবনের মাঠ পেরিয়ে কিছু মানুষ মাঝে মাঝে একটু মুক্তি চায়। আবার কেউ কেউ মুক্তির সাক্ষ্য হিসেবে সৃষ্টি করে কবিতা।
পড়ছিলাম কবি সৌহার্য্য ওসমানের ‘জলঘুমে অথরা’ কাব্যগ্রন্থটি। কাব্যগ্রন্থটি পড়ার পর মনে হলো প্রথম প্রকাশিত কাব্যগ্রন্থ হিসেবে বেশ ভালোই হয়েছে। কবি তার কবিতার ভেতর গ্রামীণ ও শহুরে জীবনের অলিগলি পথ হেঁটে, কখনো মনের ভেতরের রাস্তায়ও উঁকি দিয়েছেন খুব দক্ষতার সাথে। আবার কখনো মনের এক কোণে রেখেছেন পরাবাস্তব কিছু ভাবনা। কবির সংস্কার নামক কবিতাটির মধ্যে বাস্তবের ভেতরে কিছু পরাবাস্তব ভাবনা লক্ষ্য করা। যেমন-
মাংস ব্যবসায়ী এক খুব কাছে এসে বললো-
মাথা কাটতে দিলে মূল্য দেব,রক্তের দাম দেব না/
তার পর থেকে আমি রক্তশূন্য
মাথাটা সেই থেকে শুধুই ঘুরছে…
‘হেমন্তে বাড়ি যাবো’ শিরোনামের কবিতাটি আমার চমৎকার লেগেছে। সেখানে তিনি লিখেছেন-
রোদ সিগন্যালে টুপি পড়া ট্রাফিক জ্যাম
যেন কন্ট্রোল রুম পেরিয়ে মধ্যবেলা
নির্ভরতার একদিন ফেরি হয়ে যায়
চা-স্টলের ধোঁয়া ভেঙে ভেঙে হাওয়া কাঁপে
তার কোন কথা ছিল না তখন মনে
দূর বিলবোর্ডে মোটরসাইকেলের গতি
আমাকে বাড়ির পথ মনে করিয়ে দেয়
দিনটি আমার ভালো ছিল
তবু শূন্যতা শেখায়-
দোয়েলের শিস থাকে কত দূর!
ছুটে যাচ্ছে লাল লোকাল ট্রেন
ভাবছি, এবার হেমন্ত এলে বাড়ি যাবো
কবিতা জাদুর মতো কিছু না কিন্তু শব্দের ভেতর আরো বহু শব্দ দিয়ে এক জাদুকরী রহস্য তৈরি করে মাত্র। সৌহার্য্য ওসমানের এই কাব্য গ্রন্থটিতে কিছু কবিতা শাব্দিক রহস্যময় তৈরি করে।
পরিশেষে এটাই বলতে চাই যে, কবি এবং তার কবিতা আরো জীবন্ত হয়ে উঠুক, রহস্যের গন্ধ নিয়ে আসুক উনার আগামীর কাব্য গ্রন্থগুলো।