বিদায়
দু’হাত শুন্য। চেপে ধরা গ্লাসের ভেতর জেগে উঠা মস্তিষ্ক, শেষ বিকেলের মুখোমুখি এসে দাঁড়ায়। যেখানে কেউ নেই শুধু আমারই পা জোড়া ছাড়া। তবু উচ্ছাসে জেগে থাকা ঐ গ্রীবাদেশে, যেখানে আপন রক্তের কিছু তরতাজা আলাপের স্মৃতি তরপায়
পৃথিবীর আলো শেষে যে ঘোর অন্ধকার নেমে আসে আমার ফালি চোখের তটে, মরা পাতা সেখানে মড়মড় শব্দের কাছে বিকিয়ে দেয় শুন্যতার বিনিময়ে কিছু আলাপন, কিছু গল্প, কিছু মানুষের নয়া আয়ুষ্কাল
সমর্পিত জীবনের কাছাকাছি দু’হাত আগলে রেখে দেখা মেলে কিছু নির্মল দুঃখের পরোপকারী রাত, কারও অহংকার, আর আমার সাথে আমার পা জোড়া ছাড়া কেউ নেই, কিচ্ছু নেই
দৃষ্টিতে যাপন, শষ্যক্ষেত
চায়ের কাপে চণ্ঞু রেখে বিকেলের সূর্য টা চুমুকে চুমুকে গিলতে চেয়েছি। কিন্তু বা পাশের ভাঙা দেউড়িতে দাঁড়িয়ে থাকা পটচিত্রের সেই সব মানুষের মুখ থেকে কিলবিল করে রক্তাক্ত পোকার শরীর, আমার গা বেয়ে নেমে আসছে খুব যত্নে ধরে রাখা চায়ের কাপে
তাদের জন্যে মাটির মহৎ উষ্ণতা টের পেলে, আমি খুলে দিতাম শার্টের বোতাম।ডান পাশে রেখে দিলেই নাগরিক জলসা,সচেতন মাহফিল । অথচ জীবনের দৃঢ়তায় ভয় পেয়ে মুনিয়া পাখি উড়ে যায় দুনিয়ার নিরাপদ শষ্য খেতে
ওগো গান্ধী তোমার জন্যে, দেখো দৃঢ়ভাবে মুঠোতে এখনও চাঁন-তারা ধরে আছি সূর্যের মুখোমুখি
ফেলে দেয়া আয়নায় নিষেধ করেছিল জেঠিমা, নিজের মুখ কখনও দেখবি না। তবু চায়ের কাপে আসমানিকে দেখলে কি হবে,বিয়ে নাকি যাপিত জীবন বোধের সমাধি? আমার জানা নেই
তেঁতুল এক ক্রণিক যাদুকর
সাম ও সৌম্যের তেঁতুল আড়াল করে চলেছে ক্রমাগত এক ক্রণিক যাদুকর। যাদুর ভুলগুলো নড়েচড়ে গেলে, জীভের জল পড়ে নড়ে যায় ধর্মের ডেরা।আহা কুম্ভ , জীবনই মহান
কুনুই ভেঙে মোচড়ানো রশির কাছে গেলে কেবলি শুনি এসব গুনটানা পথ বহুদূরগামী। শুনেছি তেঁতুল আর কল্পতরুর সাথে লিকলিকে রুহু গুলোও বাতাসের বিরুদ্ধে সোচ্চার, অথচ কৌম্ভমনি জেগে আছে আশ্চর্য পাখির জীবন নিয়ে। সেই নাড়ি ছেঁড়া স্বপ্নের যাদুকর
পৃথিবীর সমস্ত তেঁতুল গাছে বার্ধক্য,বয়সের আগেই খসে পড়ে দৃষ্টি সম মৃত আর মখমলি শুকনো পাতার সাথে মায়ের হারিয়ে যাওয়া নোলক সমান তেঁতুল ফুল
খড়কুটো
রোদের স্পর্শ টুকু খুব যত্নে তুলে রাখি, যাদের কখনও লাগেনি কোন খর তাপসের দিনে কোন বৃহন্নলার।এটুকু আমাদের মতোন আকাঁ
পলকা বাতাসের ঢালে ঐ সব পাড়ার বউয়েরা ধানের চিটা কুড়ায়। পুতুলের বিয়ে হলে ঐ সবই কুমোর পাড়ার হাড়িতে চলে গেলে, আমরা দেখি কিছু বোকাদের হাসি মুখ,কিছু লজ্জা
কখনও খরপোষা বিড়ালের চোখের ভাষায় দুর্ভিক্ষপীড়িত কোন গ্রামের নারীর মুখ দেখিনি। যতদূর মনেপড়ে শষ্যের হিসাব খড়কুটোতে মিশে গেছে।অথচ নিভীর স্পর্শটুকু পলকা বাতাস হলে রোদের দিকে কিভাবে যেন মেলে ধরে তাঁর আচলে
ডানাভাঙা পাখি
কোলাহল দূরে থাকে তবু নির্জন বনের পাখির ভাষা কেউ কেউ লিখে রাখে হাতের ইশারায়। কখনও নৈবদ্য, পরিযায়ী, গোপন লোভের ফাঁদে আটকে রাখে ফেলে আসা সংসার
অমরতা শেওড়া গাছের মতো। তবু দেখি ঝাোপের আড়ালে মাতৃত্বের সাহস, ক্ষীণ পরিচিত সময়ের কাছে রেখে যায় আগামী সকাল, কুসুমের ভালোবাসা
অথচ বাদামি রঙের পকেটে কিছু অচল মানুষ থেকে যায় কাজহীন,অার অলস নয়নে তাঁর উড়ে বেড়ায় আকাশের ডানাভাঙা পাখি