কবি
তমসা মিনার ফেটে
বেরিয়ে গেছ।
আরও উঁচু আঁধারের
উড়ন্ত চুম্বনের
পিছু পিছু গেঁথে
এখন শুনছ
ফুলের স্বর।
নিরক্ষর তুমি;
এই গন্ধভাষায়
জরিপ করো স্বপ্ন।
রাত্রিভর নক্ষত্রকল্লোলে
নিহত তুমি
আবার জ্বালাও মোম
সমূহ শবের উপকূলে।
যেহেতু,
যুক্তাক্ষরময় পৃথিবীতে
তুমিই একমাত্র
সোজাসাপ্টা ব্যথা।
মৃত্যু মূলত মিউজিক
বাবা আমাকে
পাতাল থেকে তুলে
পৃথিবী দেখিয়েছিল,
সেই বাবাকে আজ
পাতালে রেখে এসে
ব্যাকরণ-অজ্ঞ আমি বুঝি
সকল অমল
ধবল হয়
কবরের
কালো পরিভাষায়।
পৃথিবীতে
তারাদের তহবিল
খালি হয়ে এলে
সন্তানের বুকের ভেতর
প্রয়াত পিতার সমাধি জ্বলে।
থেকে থেকে
এই পাষাণপ্রহর
জানায় আমাকে,
মৃত্যু মূলত মিউজিক।
প্রতিটি কফিনে
কিছু সুর লেগে থাকে।
শিল্পী
কাকভোরে ঘুম ভেঙে যায় মা’র
সেই সকাল থেকে শুরু হয়
তার শিল্পকলার আয়োজন।
গনগনে উনুনের আঁচ সইতে সইতে
আর নাশতার টেবিল সাজানোর মধ্য দিয়ে
তিনি রচনা করেন অনুপম ভৈরবী।
দুপুরের দিকে এই গীত
আরো ঘন হয়
মধ্যাহ্নভোজের চকমকি বাহারে।
সূর্য ডুবতে না ডুবতেই
আবার তার ওপর ভর করে
রন্ধন-পূরবী।
রাতের খাবার শেষে
আমরা টের পাই
দিনভর মায়ের গেঁথে তোলা গানটার
সম্পূর্ণ সুর-তাল-লয়।
আজন্ম দেখছি
মায়ের এমন নিবেদিত সাধনা।
এখন আর কাউকে
তার চেয়ে বড় শিল্পী মনে হয় না।
ভাষা
তোমার কাছে আসার পথের শত্রু
আমার নড়বড়ে ভাষার সেতু।
প্রেম তো কিছু
অলীক অক্ষর।
নভেম্বর রেইন
ময়মনসিংহ গিয়ে শুনি
সে জামালপুরে,
জামালপুরে গিয়ে শুনি
মেলান্দহে।
মেলান্দহ গিয়ে
কোথাও কাউকে না পেয়ে
হুটহাট শেরপুরে;
শেরপুর থেকে ঢাকায়
বিফল ফিরতে ফিরতে
অনুধাবনে আসে-
পথের দুই পাশে
তোমার-আমার
বিপরীত গমনাগমনের
তীব্রগন্ধা ফুল ফুটে আছে।
তোমার কথারা
তুমি কোনো কথা বলতে চাচ্ছিলে
কথার গায়ে কুয়াশা এসে পড়ছে
এর আগে পড়েছিল রোদ
এরও আগে মেঘ
তার আগে ছায়া
তারও আগে ঝড়
এবং বৃষ্টিও।
আমার কাছে আসতে আসতে
তোমার কথাটা ঢাকা পড়ে গেল
ঋতুচক্রের আবর্তনে।
নাকি তুমি
ঋতুচক্রের আবর্তনের কথাই
বলতে এসেছিলে আমাকে?
চলাচল
ফুলের রাস্তা পার হতে চাইলাম
ফুলই আমাকে পার হয়ে গেল
তারপর সে রাস্তা পেল।
হে পিয়াস
সুবাসরহিত
এবার হাঁটো।
জানো তো
দৌড়গুলো মুরাকামিদের জন্য।
জানাজানি
তুমি ভালো জানো কোনটা সিউডো
আর কোনটা মিশেল ফুকো
আমাকে জানতে হয়
০১টা ফুলের উপর চলে
কয় কয়টা চোখের জুলুম
গোধূলির গয়নাগাটি কিনতে
পকেটে যথাযোগ্য বিকেল বুনতে হয়
যে যেখানে আছো ঢাকা কিংবা মাদারীপুর
গান লেখার আলোর আগেই
জন্ম হয় গানেদের অন্ধকার সুর।
নেভাল বিকাল
ধরো তুমি, হাত ধরে বসে থাকলে
০১টা নেভাল বিকালের,
ধরো, তোমার কোনো পটভূমি নাই
আগামী নাই
নেভাল বিকালের গা ঘে়ঁষে বসে থাকা আছে।
সমুদ্রের নীল চুল থেকে
০১টা পানিপাখির উড়ে যাওয়া আছে,
তুমি বাঁধা পড়ে আছো
ঝিম ধরা কিছু কুয়াশার কাছে।
ধরো তোমার বুকে
বহু জাহাজের বেঁচে থাকা আছে,
গতি ও গন্তব্য দূরে চলে গেছে।
ধরো তুমি, সূর্যাস্ত ভালোবেসে
জনম জনম বসে রইলে সূর্যের গনগনে।
নেভাল বিকালকে মরে যেতে দেখে
ধরো তুমি,
শক্ত করে নেভাল বিকালের হাত ধরে থাকলে।
পাঠ্য
কিছু তো থাকবেই ভাঙা ফন্ট
খালি পিডিএফ চাও কেন?
একটাই জীবন,
পড়ে নাও।