ক্ষত
•••
ছোটবেলায় পয়সা জমানোর জন্যে বাঁশের খুঁটি কেটে ক্ষত তৈরি করতাম, মনে পড়ে?
দেয়ালেরও গায়ে থাকে অসংখ্য ক্ষত,
জীবন্ত গাছকেও ক্ষত করে কতো পোকামাকড়, পাখি, কাঠবিড়ালি
ক্ষতকে কিসের এতো ভয়?
বুকের ক্ষতগুলো বড় হোক যেন বড় বড় নক্ষত্রগুলো জায়গা নিতে পারে!
ঠেলাগাড়ি অথবা একটি সংসার
•••
আমাদের একটা ঠেলাগাড়ি আছে, আমি ওটা সামনে থেকে টানি, বউ পেছন থেকে ঠেলে দেয়
এভাবেই আমরা পেরিয়ে যাই, সংসারের দুর্গম যাত্রাপথ
আমার যখন পিপাসা লাগে বউকে চেটে খাই, বউয়ের যখন পিপাসা লাগে আমাকে চেটে খায়
এভাবেই ক্ষয়ে যায় আমাদের আয়ু, আয়ুর জৈব থেকে
রোজ তৈরি হয় দুটি চারাগাছ।
বিছানা
•••
কুপি নিভে গেলে নিভে যায় দিনের পৃথিবী
এপাশে আমি আগুনমুখো, ভাবি ওপাশে বয়ে যাচ্ছে জলভর্তি নদী
নদীর সাথে নদী মিশে গেলে তৈরি হয় আরেক ভাবনা
এইসব ভাবনা নিয়ে আমরা পরস্পরের ভেতর একত্রিত হই
আর তুমুলভাবে সেচ করি জল
অতঃপর সমস্ত আগুন নিভে গেলে দুটো শরীর থেকে বয়ে যায় শান্ত দুটো নদী।
শৈশব-দুই
•••
ছোটো ছেলেটির মুখ মনোযোগ দিয়ে তাকালে শৈশবের কথা মনে পড়ে
মনে পড়ে তেলকুচা ন্যাড়া, ছেঁড়া ফিতে, ভাঙা হাঁড়িকুড়ি
এইসব মিলে একটা শৈশব
কাউকে বলি না, বললে বদনাম হবে
ছোটবোনটির শ্যালোয়ারের ছিদ্র, আর পাড়ার ছেলেদের হাসি, কুণ্ডলী পাকিয়ে আছে এই বুকে, এখানে–
কখনো বের করি না, বের করলে আমার লক্ষ্মীবোনটি লজ্জা পাবে।
নারকেল
•••
শাঁস খেলে হলে আশ ছড়াতে হয়, আশ ছড়াতে লাগে হাতুড়ি ও ছেনি
সূর্যকে প্রস্রব করতে রাতের কতোটা কষ্ট হয়? কতোটা বিয়োগ ব্যথা নিয়ে মেঘেরা হয় নদীর শরীর?
রোদে পুড়ে যে ছায়ার জন্ম হয়, সে কেন কথা বলতে পারে না?
এতোসব প্রশ্ন নিয়ে আমি নারকেল খেতে গেছি, এখন আমার আঙুলে একটা নখও খুঁজে পাচ্ছি না।