সৌরভ মাহমুদ্
জন্ম – ০২ এপ্রিল ১৯৯৬ ও মৃত্যু- ২২ জানুয়ারি ২০২২
কবির অকাল প্রয়াণে কিংবদন্তি শোকাহত
‘মাও সে তুঙ এর নির্বাচিত কবিতা’ এবং ‘চিৎকার বব মার্লের গান’- তার অনুবাদকৃত বই। ২০১৮ সালে প্রকাশিত হয় সৌরভ মাহমুদ, সৈকত আমীন ও মেহেদী হাসান রাশেল এর যৌথ কবিতাগ্রন্থ ‘গন্দম’।
গেরুয়া বসনের আড়ালে ঘুম ঘুম দ্বিধা-১
আলোর আড়াল থেকে শ্যাডো জপিতেছে প্রভুর নাম।
বোবা এক ঝিঁ ঝিঁ দুপুরের ঘ্রাণে ভাসিয়েছে সব উড়াল।
খুঁজছে সে আদিম কোন গান,
পাখিদের কন্ঠের কাছে মোহময় সে প্রাণ নিজেরে করেছে অর্পণ।
এমন দৃশ্যের কাছে এ স্যপিয়েন্স বসে থাকে নানান চেহেরায়,
আয়না দেখে না বহুকাল।
সে ভাবে নির্বোধ পাতাদের কাছে মনে হয় কোন বোধ আছে,
আছে কোন ভীন্ন সুরের আয়াত।
এমন এক প্রাণ সে জানে না কেমন তার সুরত,
জল দেখতে পেলেই লাফায়, ডুবে আর ভাসে গোপন কোন ধাঁচে।
পৌঁছায় এক মারমেইডের কাছে আর তার কাছে এক ভ্রহ্মান্ডের গল্প আছে।
সেই গল্পের ভেতরে সেই স্যপিয়েন্স ঝিঁ ঝিঁ হয়ে উড়িতেছে।
গেরুয়া বসনের আড়ালে ঘুম ঘুম দ্বিধা-২
তবে কে সেই মাহুত আর কোথায় নিচ্ছে আমাদের?
আমরা কোথাও যাচ্ছি না মাই ডিয়ার।
আমরা কেবল আমাদের ভূমি উঁচু করে তুলছি আর
দৃষ্টি তার দূরত্বসীমা অতিক্রম করে চলেছে।
আমরা সেই দেবদারুর বংশধর যার সবচেয়ে উঁচু
পাতাটি সবচেয়ে দূরত্ব ভ্রমণের ক্ষমতা রাখে।
গাছের প্রত্যেক পাতাই আমাদের চোখ আর
তোমার চোখ শুধু দেখে না ধ্যান করে হাওয়ার পাঠ,
সে জানে কোন হাওয়া কতদূর পৌঁছায়।
তবে ভ্রমণ কেবল পতনের দিকেই গমন করে।
পতন বড় ব্যাথার ভাবতে পারো তুমি,
কিন্তু যে জানে ভ্রমণ এক অলৌকিক আনন্দের নাম আর
পতন না চাওয়া মানুষকেও কোথাও না কোথাও যেতেই হয়।
ফলত সেই দৃষ্টি তুমি ধারন করো যে উপযুক্ত শরৎকালে
নিজেকে স্বেচ্ছায় অবমুক্ত করতে পারে।
এ কোন আত্মদান বা আত্মহুতি নয় এ কেবল এক শিকারী
বাঘের মতো তীব্র আত্মসচেতনতা যা তোমাকে পুনঃ পুনঃ
নিজেকে আবিষ্কার করাবে এক নতুন নতুন মানচিত্রে আর
তোমার দৃষ্টি যতদূর পৌঁছাবে সমস্ত ডোরাকাটা মুছে যাবে।
এই যাত্রায় তুমিই তোমার মাহুত সকলেই সকলের মাহুত আর
একজন মাহুত তখনই শ্রেষ্ঠ যখন সে আলোহীন রাতেও
তাঁরা না দেখেও পথ বলে দিতে পারে।
গেরুয়া বসনের আড়ালে ঘুম ঘুম দ্বিধা-৩
তবে খোদা কে? কেমন ধারনা সে?
এ কোন দৈব সঙ্গিতের মাহফিল থেকে ভেসে আসা মাউথঅর্গান
যা কিছু এঙিস্ট করে তার বাইরের কিছু।
কিংবা যা করে না এঙিস্ট তা তুমি পাওনি খুঁজে মানে
সেও ধরনীর গোপনে গোপনে ধারন করে।
যা কিছু বুঝেছো তুমি তা তোমার,
যা কিছু বুঝোনি তুমি তা খোদার।
আর ক্রমে ক্রমে তুমি এক দস্যু ছিনিয়ে নিচ্ছো খোদার গোপন ঘ্রাণ,
আর ধীরে সে ফুল উবে যাওয়া অপেক্ষায় বসে আছে।
তাকে লীন করে ফেলবার জন্যই তুমি জন্মেছিলে।
খোদা এক দূরের গোপন রত্নগহ্বর যা তুমি ক্রমে যাচ্ছো লুটে,
শূন্য ঘরে একদিন তুমি পাবে শুধু ভাষা।
আর তখন সব জেনে নেওয়া শেষে তুমি পড়তে ভুলে গেছো।
তুমি কেবল দেখছো অক্ষরগুলো শ্যাডো হয়ে পড়ে আছে,
আলো ফেললেই মিলিয়ে যাবে কিন্তু চোখের বিকলঙ্গতায়
তা তুমি করতে পাচ্ছো না।
খোদা নিদারুণ ছায়াঘর হয়ে পরে আছে।