শিশাগলা চাঁন কি যন্ত্রণায় জ্যোস্না চুয়ায়
খামখা আমার একলা বিছনায় ;
রাইতচুরা চকর, কেন্ আমার গলা নিয়া কান্দে
নিশা রাইতে কেন্ আথালী-পাথালী বাজে বাঁশি
বাসন্তী হারা ওরও কি বুকে পিরীতের দারুণ খরান
ফাঁকি দিয়া কেও দিছে উড়াল — অচিন গাঁয়
হায়রে মানুষ নিষ্ঠুর!
পরান নিলি,হাউস-আহ্লদ বেবাক নিলি
কষ্টের রাইত কেন আমার একলার
আমার আসমানের তারা সব কেন্ ধুতুরা কাঁডা
মনসার বিষে তব্দা আন্ধার!
কেন্ তোর ভাদ্দরের জ্যোস্না
অহনও আমারে জ্বালায়
অহনও ছইল দেয় বানারের বেসরম পানি
জল-আয়নায় অবিকল ভাসায় তোর মুখ,
বুহের মধ্যে চৈত্রের ইডা
চান্দি রাইত মুগুরে ভাঙ্গস ধপাস ধপাস!
একবারও কি পুড়েনা পরান
দেখতে কি লয়না মুনে,
আমি কি তোর এতই হইছি পুরান
উত্তরের ধলিবক দেহি দক্ষিণ চরায় যায়
কি তামশায় ফিরা আহে জুড়া-জুড়ায়,
আমার বেবাক আয়ুশ বাহুল্যার প্যাঁচে
হুগনা পাতার লাহান বন্দেবন্দে উড়ায়!
আর বুঝি অইবোনা দেখা
ওগো উড়াল কালা বালিআাশ
কইও পাষাণীর কাছে,
পিরীতে চওয়া ক্ষেত কষ্টের আদার-বাদার
ছাড়ান দিয়া সব; যামু ভিনদেশ !
ও যেন পায় না খোঁজ যদি আমি মরি
কান্দনে কি সুখ লাশের কও
জিয়নে যারে পাইনাই আপন করি!!
খরান
দারুণ খরানে রোদে ভাজা মানুষ,মগজ
তেষ্টার দরিয়া ; আসমানে সাঁতরায়ে চিল
খুঁজে বরফের গেলাস। আগুনের গুলতি
ছুঁড়ে খেলায় সুরুজ কিশোর
নির্ঘুম চোখের পাতা।
গেরস্ত চুয়ানো ঘামে জমা হয়
ঋণের বোঝা,একমণ সোনাধানে তাও
ঢাকেনা বউয়ের সাড়ে তিন হাত গতর।
বাপের হাঁপানি বেরামে ডাক্তার,না না,
ডাকাত নিয়া গেছে এককাঠা জমিনের
বেবাক ধান, ঘামের লবণ
কেও নাই দেখবার ; যখন বিনা বাতাসে
শিলেকেচা আম ধপাশ্ ধপাশ্ পড়ে
বুকের দুবলায়!
কে আছে মানুষ! যাকে চিক্কুর দিয়া শুনাই–
আমার বুকের খরান!
বিঃদ্রঃ ময়মনসিংহের আঞ্চলিক ভাষায় রচিত