১.
অভিমান জমতে জমতে ঘন বর্ষামেঘ উঠোনের কোণে ভাতশালিকের দল পায়াচারি শেষে উড়েগেলে আকাশের তলে অদ্ভূত এক গুমোট পৃথিবী
দোলে উঠা বাতাস এলোমলো নড়তে থাকে নারকেল সুপুরি
এমন নৈশব্দিক প্রায়দুপুর বৃষ্টি আয়োজন হুইসেল বাজায় ক্রমশ ঝরতে থাকে
যেন সুখের ক্রন্দন
অদূরে পুকুর পাড়ে দুটি সোমত্ত কদম ফুলের ভারে নুয়ে থাকা ডালে মাতাল গন্ধ
জানালার ফাকগলে ইশারায় কথাকয়
২.
পানিতে ঝাপ দিয়ে সদ্য কিশোরদল সারিবদ্ধ পিপড়েজীবন উপেক্ষা করতে করতে ডুবসাতারে ভেঙে দেয় সকল সাবধানতা, কদম রেণু জলজ ঘ্রানে মাখামাখি
তখন কিশোর মন এক খেলা করে অবিরত
যেন কাক ভেজা হয়ে ফিরি দিনমান
জলে ভরা ক্ষেতের পর খুঁজে বেড়াই মাছের বাথান
কলার ভেলায় ভেসে যাই ঐ দূর গ্রাম
তবে কী জীবন এক বয়েসী বট?
শেকড় ছড়াতে ছড়াতে পূর্ণকরে স্মৃতির কোটর
৩.
ফুটবল মাঠে কাদা মেখে সময়ের ঢিল
পশ্চিম আকাশে প্রতিনিয়ত ডুবে গেছে কালের কানামাছি সঞ্চয় তবু কৈশোর কাল
চকচকে চোখের পর্দায় ভেসে থাকে আজন্ম মৌতাত
জলের ঘুঙুর জড়ায়ে আষাঢ় নাচে নরোম দুর্বায় ঘাস ফুলে মিহিন কলতান
নির্বাক দাঁড়িয়ে আছে মধ্যবয়সী শিমুল
বেদম ভিজে যাচ্ছে কন্টক শরীর
এই অবেলায় কে শুধায় তারে!
মনের খবর
৪.
পাকা জাম টুপটাপ তলিয়ে যাচ্ছে
মৃদু ঢেউ পুকুর জল
দৃষ্টির সাম্পান
সময়ের মতো তলিয়ে যাচ্ছে
নিশ্চিত এক গভীরতায়
বকুল ঝরা কতিপয় দিন
এই আষাঢ়, দেখা নাই ললিতার
তবু অফিসের চত্বর গন্ধে মাতাও
চলে যাবো——
চলে যাবো একদিন
ভালোবাসি, এই পরিচয়ে
মুঠো মুঠো প্রেম পড়িবো গলায়!
৫.
হিজল মঞ্জরি চুইয়ে গোলাপী আভা
জলমগ্ন বনে বাতাস’ র গায়
বাহারি কম্পন
ডিঙ্গির মতো ভেসে চলে এইসব বিকেল আপাত স্বচ্ছ আকাশ পাখিরা বাসা ছাড়ে খাদ্যের সন্ধানে
আবির মাখা উদাসীন সন্ধ্যা ঝাপসা হতে থাকে পৃথিবীর চোখ
কালো , আরো কালো মেঘের মতো রাতে
ভীষণ একা হয়ে যাই
পৃথিবীর মুখোমুখি দাঁড়িয়ে মনে হয়
সেও ভীষণ একা!