সুবিধুর চন্দ্রপ্রস্থের টানে
এই মুহূর্তে—
যখন পৃথিবীতে রাত বারোটা গড়াইয়া পড়ে,
ধরে নেওয়া যায়,
একজন বিবাগী পুরুষের ঘরে,
উপরন্তু বিবাহিত যে,
তার বিছানায়—
সম্মোহনের চাদর জড়ায়ে শুইয়া আছে
—অপেক্ষা, ইন্তেজার কোরে।
এইভাবে
এই প্রচন্ড জাগতিক দুনিয়ার রন্ধ্রে রন্ধ্রে
কে যেনো ঘটাচ্ছে কেবলই ছলনা বিস্তার—।
সুবিনয় চিন্তাপদ্ধতি
যেহেতু বিস্মৃতিরও গাঢ় উপলব্ধি আছে
মনন ও মেধায়— আছে
ধাবমান বৃক্ষের মতন সুদীর্ঘ অতীত
কখনও বৃক্ষ না হইয়াও দৃশ্যত বৃক্ষের ন্যায়
যা আচরণ করে; শিকড় ছড়ায়
আর স্বপত্র বিকশিতভাবে বাতাসে ওড়ে…
সুবিনয় চিন্তাপদ্ধতি জানে
ধারণার গুঞ্জনে হায়—
যদি দুইজন ঈশ্বর বসে পাশা খেলে
অবশেষে জেতে ঈশ্বরই।
তাই সকল বিপরীতক্রম ভেঙ্গে
ওষুধি লতার মতন গড়ে তুলি শুশ্রূষার ইমেজ,
অশ্বথ প্রভাবিত দুঃখ-যন্ত্রণায়
বরং স্থিত হই আরও
যাতে আঘাতের কারুকর্ম শেষে; সুসময়ে
তুমিও জানো
এ জগতে শূন্যতার অধিক কোনো বিরহ(অস্তিত্ব) নাই।
একবার ভাবো,
কিভাবে মিষ্টি নিমের গোটা ফলেছে আশায়
অর্থেরও ডিলেমা আছে জেনে—!
আহত দরবেশ
শুনেছি জন্মেরও বিগত থাকে—
সন্ধ্যামগ্ন ঝিঁঝিঁ! চিলতে উঠান! হুহু-বারান্দা!
হেন বস্তুপৃথিবীর ফাঁকে ফাঁকে জৈব লালসা,
আহতভাবে দ্যাখা ভীমপলাশ,
চিরকালের বুকে বেজে ওঠা কোমল ধা—
কিছুই তো মনে নাই
শুধু হালকা গাঢ় লাল রেশ ছাড়া।
তবু ঘুমের ঘোরে যে চৈতন্য জাগে
সেখানে খোদার চেহারা—
অর্থবিভীষিকাময়!
হৃদয় নিরাকুল হলে পাখি উড়ে যাওয়া ছাড়া কোনো কাজ থাকে না যেহেতু,
আমৃত্যু:
শুধু গোপন ও গভীর কুয়া—
তাতে ছায়া পড়ে থাকা
দুনিয়াদারি।
বাবা,
স্মরণশক্তির মাঝে বেড়ে ওঠা ডিমেনশিয়া,
ক্যানো মানবজীবন এতো এলিমেন্টারি, বলতে পারো!
চেতনার বখাটে ফুল
চেতনা ছেয়ে আছে বখাটে ফুলে
এমনও তার ঘ্রাণ, মোঞ্চায় যাবো নষ্ট হয়ে—
সামাজিক ধারণা মোতাবেক:
উড়নচণ্ডী হাওয়া রাখে যে গোপন কোরে,
এবং অবৈধ ভাবে
নেশায় আর্দ্র এই তামসী ঘ্রাণ।
যদিও আপ্রাণ ভেবে গেছি
উড়ে যাবার মতন কোনো সন্ধ্যায়
আচমকা মনে হবো কোমল সারস,
সারাদিন দো-আঁশ মাটি অল্প ভিজে,
সামান্য কথায়
পাপিয়ারা কেঁদে ওঠবো আদিকাল ধরে।
অথচ কেবল, অথচ কেবলই,
কি সুখ ফোঁপায় সন্ত্রস্ত বিবেকের মাঝে,
না জেনে
যেসব আচরণ গড়ে তুলেছে সমাজ
শুধু ভয়ে ও অনিশ্চয়তাবোধে—
কিসের ভরসায় আরক্ত হবো তার প্রতি; যে
নিজেই জানে না
চেতনার বখাটে ফুলে তারও জমে আছে ঘ্রাণ।
মামুলি বৃষ্টির ফোঁটা
ত্রাতা আসবে—
আবির্ভাবের প্রতি মানুষের এই অলৌকিক পিপাসা, সীমাবদ্ধ প্রোফেসি, অলস মেধায় ঝিম ধরে থাকা আর্তনাদ, কাতরতা, প্রতিনায়কের কল্পনা, ষড়যন্ত্রের মতন বেঁচে থাকা, সবই যেনো ধূলিঝড়; মরুযন্ত্রণা লাগে— যেখানে তর্কেরা অবিসংবাদী হতে চায়, নব্যুয়ত মাগে।
আমি অতি ক্ষুদ্র পরম্পরা, তবু এই অবাধ হিপোক্রেসি
স্বীকার করবো না বলে
অবিরাম সংশয়ে, দ্বিধায়—
আপক্ব ডালিমের দানা ফেটে যেতে থাকি।
আর যেহেতু প্রকৃত মূর্খ সেই
যে যথার্থ জ্ঞানী;
সেহেতু বুদ্ধিবৃত্তি ছেড়ে মনে হয় জঙ্গলে যাই—
কিন্তু যে গণিতবিদ্যা বোঝে
সে কি পুনরায় আশ্রয় পাবে—
আদিম সহিংসতায়—ফেলে আসা বাস্তুসংস্থানে,
যার আছে নিশ্চয়তাবোধ— যূথবদ্ধ নিঃসঙ্গতা—
সে কি আর চাইলেই মরে যেতে পারে
মায়াহরিণীর মতো—?
সেহেতু গভীর প্রত্যয়ে
মস্তিষ্কের সকল উপকরণ এলোমেলো কোরে
সমস্ত বর্ম ও বিষাদ ভুলে
সিদ্ধান্ত টানি,
চিরায়ত মুক্তির ধারণায় বসে আছে অমোঘ ঈশ্বর।
অথচ দ্যাখো,
মামুলি বৃষ্টির ফোঁটাও কী বিপুল সম্ভাবনাময়ী!
এই বিষণ্ণ মরলোকে, হে অর্থলোভী,
তোমাদের কেবল ভাবতে পারতে হবে মিথের অতীত— নায়কশূন্য এক সাহসী পৃথিবী। অল্প কথায়।
লীলা
মাষকলাইয়ের ক্ষেতে অস্তায়মান শীত।
প্রসন্ন রোদে পুড়তেছে ভূগোলবিদ কোনো
চাষামন নিয়ে, সংসারে
মা ছড়াচ্ছে টি টি— খুদ ছিটানোর কৌশলে,
বাচ্চাদের সন্তুষ্ট নিখিল টুপছে অবিদিত ঘুমে।
কিন্তু, পৃথিবীর গভীরতম হাঁস কি আমাদের বাড়ি চেনে—?
মোদকে মোদকে সে কি ব্যর্থ— পরাভূত—
চেতনা-নীল-হয়ে-যাওয়া বিষ ঝরছে যেখানে?
সুদূরপ্রসারী হাওয়া এনে
দয়াবতী মেঘের কোলে দাও, দেখবে,
মতাদর্শের বাইরে চমৎকার বেঁচে থাকা যায়!
কিন্তু, পৃথিবীর গভীরতম হাঁস কি আমাদের বাড়ি চেনে—?
সুতরাং,
বিদ্রোহ চলছে। চলবে।
এ এক চলমান প্রক্রিয়া আমাদের ক্লান্ত বোধে।