দূর বর্ষার ভেজা বেলীফুল
খুঁজে ফিরো তুমি দূর বরষার ভেজা ইউনিফর্ম
পথে কাদাজলে বকের ছায়া উড়ে যাচ্ছে চোখে
নুয়ে পড়ার আগে বুড়ি বেলীফুল
বর্ষাস্মৃতি তার ভাঙছে দু-কূল।
ভেজা বসন্তে আজি কি ভাবছো বসে বাসের সিটে?
সারা বেলীফুল চুয়ে দূর বর্ষা নামে ওই দৃষ্টিপটে।
অস্থিরতার বাতাসে ফুটছে পার্পল-সাদা ফুল,
মৃত বেড়ালের ছেঁড়া চামড়ায়, কিংবা স্মৃতির
খোলা জানালায় শুকায় অমার্জনীয় ভুল।
পুরানো স্মৃতির জঞ্জাল আজ টেনে আনা দায়
সন্ধ্যার পিচে ফুটছে সোডিয়াম, লহমায় মনে
পড়ছো অবিরাম, পথে সংসার গড়িয়ে যায়।
এঁদো জলাটির পাশে খেয়ালি হাঁটার কালে
আত্মমগ্ন শামুকের শুঁড় দেখেছি -দোলে কি খেয়ালে!
তেজপাতা গাছে, জবার ছায়ায়, গন্ধ আরতির
দ্রুত দাদরায় মন্দিরের বাতাস, কাঁপে তিরতির।
বেদনার ঘুম নেই
স্মৃতির পাজলে লয় হইতেছে বর্তমান
মাগরিবের আজানে বাড়ে অস্থিরতার টান,
ফোন আসে, বলে- ঘরে ভালো লাগেনা,
অপেক্ষায় আছি, প্লিজ বাইরে আসো না!
এরকম,
বিভিন্নরকম অপেক্ষার সাড়া দিতে হয়
নেশাঘোরে মাথা- ভাবনার জঞ্জালে লয়,
দেখাসাক্ষাত ভরা থাকে আরো অস্থিরতায়
বন্ধুর রেখা এগোয় এন্ট্রপির খেরোখাতায়
অফিসে বিশ সালের কোন ক্যালেন্ডার নেই
ফোনের মনিটরে আনকোরা তারিখ তো আসেই!
অপেক্ষার প্রহর যেতে যেতে বয়েস কমে যায়,
পৃথিবীময় চিরকালই আনন্দসকল ঘুমায়
কখনো ক্ষণকাল জেগে থাকে জোর করে,
শুধু বেদনার যেনো ঘুম নেই চোখ জুড়ে।
আনন্দ
তোমার খোঁজে দীর্ঘ বেতবন,
ধানডোবা বিলে
সারি সারি বেতের কাঁটায়,
ঘোলা বেতফলে
চা-গাছে জমা বৃষ্টির ফোঁটায় চোখ
ভ্রমণ করেছে দীর্ঘকাল।
কি নামে নিয়ে ক্যামোফ্লাজ কোন
শহরে লুকিয়েছো
দূরে যেতে যেতে নীলাভ পাহাড়ের
রেখা টেনে গেছো
কল্পনার অধিক দূরে, না জানি কার
সাথে কাটাও সকাল
ভেজামাটি পথ হেঁটে আসা জীবন
চিরহরিৎ গাছ নয়
দ্রুত হেঁটে গিয়ে ফিরে দেখি আনন্দ
পিছে পড়ে রয়
আনন্দ, সে ছেঁড়া পকেটে কুড়ানো নুড়ি
ঝড়ে যায় চিরকাল
একটি পাতাহীন গাছের ছবি
যদি আঁকতে চাই একটা অভিমানী গাছ
সে গাছটিতে কোন সবুজ পাতা থাকেনা
ফুলের বোঁটায় রাজ্যের আঁধার নামে
রঙের কোলাহলে নদী জলের প্রবাহ
প্রবল বন্যায় ভেসে যায় মন্দির
যদি শালিকের সাথে মিতালী হতো
বহু কথা জেনে যেতাম সকাল হতেই
ঘন্টাবাধা গরুদের মতো চড়ে বেড়াতাম
বেড়া ভেঙে খেয়ে যেতাম তোমার স্বামীর সম্পদ
অভিমানী গাছে ডালগুলো শুকাতে থাকে
রঙ খসে যাচ্ছে পুরানো বাকলে
কীড়া হয়ে গাছের ভেতর ঢুকে যাবো
খেয়ে নেবো নিজের সৃষ্টি
মধুকাব্যের গুঞ্জরন শোনা যায় গাছের নিচে
কে আবৃত্তি করে চলছে এ মধুর কাব্য?
নাকি ডাকছে উনমনা কোন পাখি?
না’কি কোন মিছিল যাচ্ছে স্লোগান মুখর,
ওই গাছটিকে পাশ কেটে?
একটা গাছ অভিমানী হতে পারে
এ নিয়ে আমাদের কোন ভাবনা নেই,
শেকড়ের সাথে ঘেষে শুয়ে থাকবো
যদি শোনা যায় তার দীর্ঘশ্বাস
গৃহহীন কুকুর হয়ে সাথী হবো
বসে বসে আঁকবো পাতাহীন বৃক্ষটি
অভিমানী গাছটি আঁকবো।
লকডাউনে বিকশিত কবিতা
এইখানে ব্যাথা অনেক বেশি
ঋতু শেষে শুকায় পারিজাত
সকাল হলে চডুই পাখির কাশি
ভীষণ খড়ায় কাটছে প্রতি রাত।
অশ্রুজলের ক্ষুদ্র নদীর বুকে
দুঃখ খেয়ে মীন ডুবে যায় জলে
সারমেয়বত তোমার গন্ধ শুঁকে
ঢুকে যাচ্ছি ব্রেসিয়ারের তলে।
বাগান জুড়ে মৌসুমি ফুল গাছ
কাঠবিড়ালীর ভীতু চোখের পর
ধুলায় রোগা মাঠকুকুরের বাস
কল্কি ঘিরে জমছে নেশাখোর।
ইদানীংকাল মন্দা প্রেমের বাজার
রক্তঝড়া সন্ধ্যা চোষে মশায়
নিভলে জয়েন্ট রেখে দেয়া আবার
আরো একবার পরে টানার আশায়।
আলো ফুটছে জয়েন্ট পোড়া ধোঁয়ায়
শিউলি ফোটার ঋতু গেছে দূর
নেশার ঘোরে আবোলতাবোল লেখায়
ভুল ছন্দে আরোপিত সুর।
লকডাউনে ঘরে বন্দী আকাশ
জানালাতে বাঁশি বাজে করুণ
সুরের ভেতর ঢুকে যাচ্ছো সকাশ
উঠতি প্রেমের সম্ভাবনার দরুন।