চুম্বন
চুম্বনে লুম্বিনী মুদ্রা ৷ কত আগে ঘুমবনে পাখি ?
প্রখর সুরজ জানে উরজের তুঙ্গস্পর্শ মান ৷
শিশু ভোলে ক্ষুধা-তৃষ্ণা, আমি সে-পবিত্রে মাথা রাখি
অন্যেও রেখেছে মন ৷ তাই সৃষ্টি, পৃথ্বী জুড়ে গান ৷
চুম্বন প্রকৃত অর্থে স্নেহদাগ, তারপরে লীলা
সাবলীল না হলে কি কেন এত অশনি-বিদ্যুৎ
মেঘে-মেঘে খেলা করে ? লেখাতেই সে-অন্তঃসলিলা
বয়ে যায় নিরুপাধি — ভুল-ত্রুটি অথবা নিখুঁত
তাহাকে চুম্বন জেনো ৷ এ যে এক অভাবিত রস !
লুম্বিনী নগরে রাত ৷ তথাগত ৷ সবই তার বশ…
শ্রাবণের গান
দৃষ্টির গভীরে এক সম্মোহন—দূরে থাকা দায় ৷
মেঘ ডাকে ৷ পদ্মদিঘি ৷ আমিও বলেছি ডেকে,পানি ৷
মুগ্ধতার অবকাশে ধারাজল— তোমাকেই জানি
রুলটানা কাগজের সুলতানা— কবিতাসহায় ৷
বারবার পড়ি এই মুগ্ধবেশ— নিঝুম আড়াল ৷
কেউ তো দেখে না—ঢেউ নিরবধি—নদী বিরহিনী…
সমুদ্র-হাওয়ায় নুন ৷ নিশিচাঁদ ৷ কাঁপে ঝাউডাল ৷
তৃষ্ণার্ত হৃদয় আজ — পড়ন্ত বেলার কাছে ঋণী ৷
তবু ওই নির্নিমেষ দৃষ্টি থেকে শ্রাবণের ঘ্রাণ
সে কোন্ জীবন ছুঁয়ে বনে-বনে হয়ে ওঠে গান ৷
শাহজাদি
শঙ্খনাদে শুভংকর— সে তো নয় মন কষাকষি !
মণকষা হতে পারে ৷ কড়া-গণ্ডা, শতকিয়া পণ
সেসব হিসেবকেতা কবেকার ? ফাঁকির জীবন
কখনও ছিল না গুরুবিদ্যালয়ে ৷ অকারণে দোষী
মুহূর্তে সাব্যস্ত করা ভালো সে কি ? বিন্যস্ত পয়ার
সে কবে আরুণি হবে, উপশম, মেঘের নিদান…
কেউই জানে না ৷ তবু, মন এক আশ্চর্য ড্রয়ার
ভিতরে-ভিতরে সে-ও অন্ধকার-আলো অভিমান…
আবেগে ভেঙেছ, তাতে ক্ষতি নেই ৷ লেখার স্বরূপ
এলোমেলো হলেই তো যুগন্ধর— শুভংকর-ধাঁধা…
এই আধুনিকে জাদু… ধুনি সে জ্বালিয়ে রেখে আদি ৷
পয়ারে ফিরলে,পয়া— উপায় যে সেজেগুজে চুপ
তোমাকে এমন করে কেন আর ‘রানি’ বলে সাধা !
কবিতাঅরণ্যে তুমি ঘোর,তুমি বন্য শাহজাদি ৷
ধু ধু
দোয়াতে যত না কালি তার থেকে ততোধিক দোয়া
তোমাকে চেয়েছি বলে—আড়ালে হল না হাত ছোঁয়া ৷
হাত মানে রাতপাখি — চাঁদজাগা তার দুই চোখে
আমার কাতর ছায়া জাগে নাকি অভাবিত শ্লোকে !
তা আমি বুঝিনি বলে বিরচিত হল কত দোঁহা,
দোয়াতে যত না কালি, তার থেকে ততোধিক তোয়া
খেলায় তোমাকে ডেকে— লেখায় হারতে জানে শুধু
দোয়াতে যত না কালি, ভালোবাসা ততোধিক ধু ধু…
অসমাপ্ত বাক্যে…
প্রার্থনার মতো অপেক্ষায়… কয়েক পৃষ্ঠা যন্ত্রণা…
কী লিখিব ? একাকার ? শূন্যতা…
আসুক,ভাসুক সে ভাসপাখি… আভাষে, ইঙ্গিতে,
চিন্তাসূত্র— কবিতা লেখার আগে ভাব পায় ৷
আবহ থেকেই ভয়… অসমাপ্ত…
আসলে সূর্যোদয় …
পূর্বদেশ থেকে কেউ তরঙ্গনদীয়া ওই ..
অশ্রুবিন্দু দু’চোখ সিন্ধুসরস্বতী…
অত:পর চার্লস…
এসেছে অলসনিদে, সন্ধ্যামণি, আঁধারকলস ৷
সকলই প্রভুর ইচ্ছা ৷ আশীর্বাদ ৷
কায়মনোবাক্যে তাঁকে লহি ৷ উচ্চাসনে, তাকে রাখি ৷
অতীত কুলুঙ্গি, কালিমাখা, লম্ফের প্রজ্জ্বলিত শিষ…
কালী,কালি…
যতক্ষণ আলো, ওই চিন্তাসূত্র…
রূপালি বিভোর স্বপ্নাদেশ…
ঐশ্বরীয় ইসবপুরের নদী ৷
ডাউসন… শন্ শন্ হাওয়া কী গতিকে খণ্ডচাঁদ… লবণ, লবণ…
ভবপাগলা, তোমাকে বাসিব ভালো অসমাপ্ত বাক্যে পুনরায়…