একটি ধনেশপাখি শহরতলির টেলিগ্রাফের তারে বসে যাবতীয় কর্তৃত্ব গ্রহণ করার পর তারা পাখিটির অধীনে উন্নতি লাভ করতে শুরু করে। গানের শব্দের মতো এইখানে তার রাজত্ব করে। আর আমি উদ্ভটচোখে পাখিটির কর্তৃত্ব গ্রহণ করতে বিস্তারিত হই।

শহরতলিতে রাত্রি খুলছে তার অন্ধকার নখর আর রুপালি বিভ্রম। আর তাই তারা একটি নতুন আলো ক্রয় করে। আর অন্যান্যরা খুব দুর্বল। তারা আঁধারে যে কোনো বাতি ছাড়া বিছানার দিকে প্রত্যাগত। এবং প্রার্থনা করতে করতে স্মরণ করে, আমার ঈশ্বর, আমি এবং শান্তি প্রয়োজন। কেউ অন্য বিছানাতে, কারো পেট ঘুমোয়, কারো বৃত্তান্ত বালিশের বিরুদ্ধে, কারো বাহু অসমতল খড়ের শয্যায় বিলাপিত এবং পা ভাসমান ঝুল। কেউ একটি মুখমণ্ডল ভোগদখল করে এবং কারো হাত সংস্থাপন-প্রবণ রূপরেখায় কেটে ফেলা বাহির। সে আর্দ্র মূলের সঙ্গে একটি কলাকে প্রকট করে এবং সেখানে শুরু হয় দাঁড়ানো। সে তার মুখে এর স্বাদ ভাঁজ করে রাখতে পারে।

পাখিপতি তাকে একটি বীজ দেয়—যেটি তার দয়াসিক্ত বক্ষবন্ধের মধ্যে প্রায় দৃশ্যমান। একটি অবসন্ন আন্দোলন তাকে ভুল করে এবং কালো চুলের সঙ্গে যোগাযোগ ছিন্ন করতে বলে, সে যখন নৃত্যরত চিল—তাকে একটি সহজ বসন দ্বারা ঢেকে দেয়া হয়। তার মৃত্যুতে ধনেশ কাঁদে; কারণ সে পাখিবীজ ধারণ করেছিলো। এইদিন পাথরের একটি ক্ষয় লক্ষ করা হয়। মৃত একটি ঘৃণা তার মুক্ত হাত উত্তোলন করে এবং ঠোঁটে কম্পন বুনে। সে হিশেবে তার জীবনযাপন, চুম্বন উষ্ণ। আর ইত্যাকার ভব্যতা অনুভব করতে পারে যদি ইহা একটি ভেড়ার পশম দ্বারা ঢেকে দেয়া হয়। তোমাদের পাড়ায় পাখির স্তনকেও কি বুনি বলে? পাখির আবার স্তন থাকে নাকি!

বনের তলদেশে দাঁড়ানো একটি গাছ এবং গাছের পাড়ে একটি বহনযোগ্য স্নানঘর দৃশ্যমতি। এর ছবি প্রাচুর্য আর একটি মানুষের আত্মা দ্বারা লালিত। আসলে যখন একটি বাড়িকে পরিবহণ করা অনুষঙ্গের জন্যে—দুইটি কাঠের তৈরি হাতল সাধারণভাবে ধারণ করে—তখন আমি ব্যক্তিগত প্রভাব সংরক্ষণ করার জন্যে প্রহননের রূপ ব্যবহার করি। কী প্রহননে তুমি জেগেছিলে শুদ্ধ তারা? আর এইখানে আমি রাত জেগে ক্ষয় করি চোখ, দৃষ্টি, দৃশ্য ও দ্রষ্টব্য।

আমি বেমালুম ভুলে গেলাম রুপালি আয়নায় মুখ দেখা। কিছু কীট বিশ্বজনীন আবির্ভূত হতে যাকিছু করবে তার মধ্য দিয়ে আসন সংরক্ষণ করে একটি তারাতে আছে একটি চালকের স্মৃতি। তাদেরকে স্বীকার করা উচিত, তাদের মদ শেষ হয়ে গিয়েছিলো। আমি ঋত্বিক হলে কাউকে ছাড়তাম না। শেষ হয়ে যাক বোতল, যুক্তি তক্কো গপ্পো, তাতে কী! আমার হাতে পরশপাথর। আমি যিশু—মৃতকে জীবন দিতে পারি—ভেঙে জুড়ে দিতে পারি তার মতো প্রযোজকের বাড়ি। কোনো জিনিশ বা বস্তু দ্বারা বাড়ির কাজ শুরু করে দিলে তারা দ্বিতীয় মেঝেতে একটি ঘর থেকে নৃত্য বহন করে একটি অ›ধ বালিকার জন্যে।

রাস্তায় ঝরাফুলগুলি ঝড়োহাওয়ায় ঢেউ হচ্ছিলো, কাগজের ছুরি হাতে বিশল্যচেতন আমি তার পাশে বসেছিলাম আনমনে। মনমোহন বিকেলের পর রিকশাবাজ হচ্ছিলো রাস্তা। দুইমাস তেরোদিন আগে প্রবহমান ছিলো যাকিছু সুর, তার মধ্যে ছিলো কামনা, এবং আমরা যেতে চাইছিলাম যেখানে কোনোটি নয় আর। এই খুনসুটি ছেনে বের করবো সুন্দর ও কদাকার।

Share.

নির্ঝর নৈঃশব্দ্য এর জন্ম ২৪ আগস্ট ১৯৮১, চকরিয়া, কক্সবাজার, বাঙলাদেশ। লেখালেখি আর ছবি আঁকাই মূল কাজ। পড়াশোনা করেছেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের চিত্রকলা বিষয়ে। এখন পর্যন্ত বই লিখেছেন ১৬ টি। প্রকাশিত বই (কবিতা): পাখি ও পাপ (২০১১), কাপালিকের চোখের রং (২০১৩), মহিষের হাসি (২০১৫), হুহুপাখি আমার প্রাণরাক্ষস (২০১৭), উদ্ভিদ ও বৃন্দাবনী (২০১৯)। প্রকাশিত বই (মুক্তগদ্য): শোনো, এইখানে বর্ষাকালে বৃষ্টি হয় (২০১১), পুরুষপাখি (২০১৪), আকাশ ফুরিয়ে যায় (২০১৭), কুসুমকুমার (২০১৯), কবিতালেখকের জার্নাল (২০২০), আমি ও গেওর্গে আব্বাস (২০২০)। প্রকাশিত বই (গল্প ও প্রবন্ধ): ডুবোজ্বর (২০১২, ), আরজ আলী : আলো-আঁধারির পরিব্রাজক (২০১৫), রাজহাঁস যেভাবে মাছ হয় (২০১৬), ফুলের অসুখ (২০২০)। সম্পাদিত বই : ওঙ্কারসমগ্র : বঙ্গবন্ধুর নির্বাচিত ভাষণের শ্রুতিলিপি (২০১৭)। সম্পাদিত ছোটোকাগজ : মুক্তগদ্য (২০১১ থেকে) । সম্পাদিত অনলাইন : kothaboli.com

Exit mobile version