জগৎ

শালগাছের ফুল
লতানো গাছের ডালে সাপ
হরিণের শিং
অন্ধকারের ভেতর গুচ্ছ গুচ্ছ জোনাকি
জ্বলতে-থাকা বেড়ালের চোখ
চিতাবাঘের গর্দানের রোঁয়া
শিউলি ফুল
শিশির
এসবই দেখলাম
মানুষের হাঁটা, চলা, তাকানো
আর কথা বলার ভেতর।


ঘর

চেয়ারের সামনে দাঁড়িয়ে শুনি
কাঠের ভেতরে
গাছ কাঁদছে।
মেঝেতে শুয়ে
কান খাড়া করে রাখলেই শোনা যায়
পাথরের গোঙানি।
বেসিনের সামনে
চোখেমুখে জলের ঝাপটা দিলেই
কানে বাজে বন্দি রাজকুমারীর মতো
ঝরনার দীর্ঘশ্বাস।

প্রকৃতির কান্না দিয়ে বানানো
আমাদের ঘর।


আঘাত

বাঁশ দিয়ে পেটানো হচ্ছে তাকে।

আঘাতের পর আঘাতে
মাটিতে লুটিয়ে পড়ল যুবা।

গণপিটুনির এই দৃশ্য দেখি
আর টিভির সামনে স্তব্ধ বসে থাকি।

তারপর
নিজেকে সান্ত্বনা দিই
বারান্দায় আসি।
দেখি
আঘাতে নয়
আনন্দে
ধুলোমাটির ওপর লুটিয়ে পড়েছে ফুল…


ভ্রম

মৃত্যু আর কিছুই নয়
ডাকাডাকি শেষ করে
একটি পাখির উড়ে যাওয়া।
জীবন, তাহলে, আসলে
পাখির ডাক
যাকে
মনে হয়
সংগীত।


পথ

সে কি
মন ভুলিয়ে
কেবল গ্রাম ছাড়ার কথাই বলে তোমায়?
ফিরে আসার কথা বলে না?

Share.

জন্ম বাঁকুড়ার বেলিয়াতোড়। কবি বর্তমানে বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি সাহিত্যের অধ্যাপক। স্বল্পকালের জন্য ছিলেন সাহিত্য আকাদেমির পূর্বাঞ্চলের সচিব। কবিতার পাশাপাশি লিখেছেন বেশ কিছু ছোটোগল্প ও কয়েকটি উপন্যাস। সম্পাদনা করেছেন অস্ট্রেলিয়ার অ্যাবওরিজিনাল কবিতার বাংলা অনুবাদের একটি গ্রন্থ, কালো অস্ট্রেলিয়ার কবিতা ও ভারতবর্ষের বিভিন্ন ভাষার কবিতার বংলা অনুবাদের সংকলন, সীমানা ছাড়িয়ে। পেয়েছেন বাংলা আকাদেমি, কৃত্তিবাস, বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষদ পুরস্কার।

Exit mobile version