শিরনামহীন সন্ধ্যারা

মনখারাপ দীর্ঘ হলে চাঁদ নামে ধূলোর শহরে। আড়াল আলোর সেঁতার সুর রক্তে পা ডুবায়, যেন ঘুমের ভেতর হেটে যায় কুমারী নদীর ঋতুমতী স্বপ্ন – মেয়েটাকে বিষণ্নতার সর্বনামে ডাকি, কথা ও কোলাজে ভূতাত্ত্বিকগণ নামের যথার্থতা পাবেন না; কিন্তু খনিজ অনুবাদক আমি প্রত্নলিপি থেকে পাঠকরি ভূগর্ভস্থ পাখির অস্তিতে লেখা  আকাশের বায়োগ্রাফার…


মায়াবী মাঠ

মেঘ ও ময়ূর যাত্রায় মায়াবী মাঠ পেরুলে তোমার বাড়ি

মরমি বাতাসে ঢেউ ঢেউ ঘ্রাণ

নিমগ্ন  নদীর নির্জন স্বরলিপি

বাউল পায়ের ছাপ লিখে রাখে ভেজা বালি

কয়েকটা রাজহাস জলের সুরে ডুবে যায়  ভেসে ওঠে

ছাতিম ফুলের গন্ধে মগ্ন যাদুকরী পুকুর

রূপকথায় স্নানকরে বোন চারুমতি বেড়াতে যায় বাবুইয়ের নীড়ে

লক্ষ্মী পেঁচার ডাকে রাত্রি  গাঢ় হয়  আরো

এসব দৃশ্যের মধ্যবর্তী পথে দাড়িয়ে থাকি

একাকী

মায়াবী মাঠের ওপার তোমার বাড়ি…


মগ্নতা

লাউডগায় লকলকে সকাল-

রোদঘেসে শাদাফুল শীতকাল ফুটে আছে শরীরে;

মেঘের মায়াবী ওমে আদুরে আকাশ বেহালার সুরে

নির্জন ডালা মেলে,

জানালা মেখেনেয় একটুকরো রোদ;

নিমগ্ন নদী স্নাণশেষে ফিরে আসে-

সন্ধ্যার বিষণ্ন শহর পাঠকরে লাউডগা,

শিশির আর পারীযায়ী ভোরের প্রত্নবিস্ময়।


হালখাতা

হলুদ পাতার বনে বনে সন্ধ্যা নামে

কতটা উষ্ণতায় বাষ্পহয় শীত ঋতু?

বিগত চৈত্রের গানে

পুরানো বছরের খাতা খুলে মিলিয়ে নাও চুম্বন চিহ্ন

কয়েকটা নদী ঘিরে রাজহাসের উৎসব

তীরবর্তী গ্রামে বৈশাখ বৈশাখ ঘ্রাণ

রূপকথার মাঠে  বিকেল নামে

রোববারের হাটে মাটির ঘোড়ার দৌড়

কুমর পাড়ার লক্ষ্মী বউটার শরীরে পালযুগের শিল্পকলা

একতারার টংকারে জেগে ওঠা ঢেউ’এ ঢেউ’এ ভাসান গানের আসর

বাউল বাতাসে বাউণ্ডুলে ঘুড়িটা ছিঁড়েছে নাটাই

হাওয়াই মিঠাই মুড়কি মোয়ার মেলা বটতলায়

খাতাখোল, লেখা আছে চর্য্যাচর্য্যবিনিশ্চয়

এই হালখাতায় জমা দেবো নদীবৃত্তিক হৃদয়।।


লুপ্ত গ্রন্থাগার

মৃতনদীটার সিথানে লাবন্যময় চর।দূর্লভ সবুজের কোলাহলে  ঘুমন্তু দুর্বা কোমল। আমার মৃত্যুর পাশে কোন শ্যাম রঙ রমনী এলিয়ে রেখেছে চুল। দৃষ্টিতে বিষণ্ন সুন্দর, চোখের কোনে শিশিরের জল। ভায়েলিনের উজ্জ্বল সুরে ঢেউ ঢেউ নিঃসঙ্গতা।নির্ঝর কফিনের নিমগ্ন শাদায় মেঘের ঘ্রাণ।

পৃষ্ঠায় পৃষ্ঠায় ব্যার্থতার উপখ্যান – জীবন কোন লুপ্ত গ্রন্থাগার ; নৈঃশব্দিক শব্দে নির্বণ নিরবতার কোলাজ।

Share.

৬ মে জন্ম বরিশাল সম্পাদিত ছোট কাগজ - শঙ্খদ্বীপ

Exit mobile version