আমার মায়ের নাম ছিলো রোদ।
অথচ তার মা ছিলো এলবাট্রস বংশীয়।
বেগুনি মননের মানুষ ছিলেন ‘তুমি’!
আমি এই কাঠকবিতায় তার নাম লিখতে এসেছি ‘আমি’,
আমার মা, হাওয়ামাখানিয়া ফুলেরগন্ধ যেন ‘উম্মে কুলসুম’!
‘উম্মে কুলসুম’! আমার মা, রোদের ঘ্রাণময় কবাটে যাকে
আমি নকনক ডেকে যাই, আরাত্রি!
আমার মা একটা লাল গাড়ি, যা আমার মেরুদন্ড দিয়ে ছোটে
ধী এক হ্রী বাজের গতিতে! এই পাষাণভার পৃথিবীর বুড়ো অন্ধকার ঠেলে
আমার মায়ের জরায়ন থেকে এক থকথকে নক্ষত্রের মতো আমি নেমে আসি,
আমার না-ভীত নাভিতো মা আমার সাথেই নেমে আসেন হাতে নিয়ে
আমার প্রতি তার হীরাখচিত বিশ্বাস! আমার মায়ের চোখ থেমে গেছে গেছে জলেতে আজ।
ডানাবিহগী ডাকাডাকি আমাদের স্মিতমগজ থেকে
মায়ের রতœময় তন্দ্রায় দিয়েছে আজ হানা। উম্মে কুলসুম!
উম্মে কুলসুম! আমি আজ ‘তুমি’
আপনার মাথায় বোলাই প্রগত হাত চোখ খুলে দেখো
তুমি এসে গেছি দূরদেশী এই আমি আজ না মাগো,
আমার ফেরেশতা তোমায় দেখাতে নয় আর জানো
এই ‘তুমি’ মা, নিজের কাঁধের ফেরেশতার কাঁধে চাপিয়ে দিলাম
আমি তোমার সর্বনাম!


রুদ্ধশ্বাস, কবির বাবার যা ঘটেছিলো

“ একটা মারাত্মক কবিতা লিখবেন”
আমি জানতে চাইলেই …
বাবা আলমিরার কোথাও থেকে নিয়ে
গিলাফের অভ্যন্তরীণ আলোর কিতাব খোলেন।
দেরাজ থেকে ক্লদিওলাসের জলকলম বের করেন।
পিতার হাত থেকে বাংলা-হিন্দি-ঊর্দু মিশ্রিত কিছু আশা করে
চেয়ে থেকে থেকে করাতকলে চিরে যায় সুগন্ধ-চন্দন।
তাঁর দেহ থেকে অনর্গল কী এক ক্লোরোফর্মসম শাদা মৌতাত বেরোতে থাকে।
এর পরের কাহিনী অবলম্বনেই তার কবিতাটি রচিত হতে থাকে,
শাব্দিকস্রোত গড়িয়ে যেতে থাকে অত্যুষ্ণ ফেনিল,
উদ্ভিদের মতোন আমার মাথা পাতা ছেড়ে দিতে দিতে তাতে অভিগামী হয়।
এরপরে কাব্য ও মাখ্রাজের মুহুর্মুহু বিচ্ছুরণ!
আনি ঢাল আনি ক্যাডমিয়াম দেয়াল এড়াতে পারিনা
কবিজনকের তেজস্ক্রিয়া।

অবসিত অচেতনার পরে আমি আমার বাবারে খুঁজে হয়রান।
আচকানের ভেতর আমার বাবার দেহ ছিলো, তাঁর হাতে কলম ছিলো।
একটা মারাত্মক কবিতা লেখা আজো প্রতিশ্রতি।


নুয়ান্স

সকাল।
আলেকজান্ডারের ঘ্রাণ…
দূর সূর্য
প্রেক্ষাপট
নিবিড় হয়ে আসা আয়াতের রাত্রি
রোদবনে সবুজের শীতল ছবি শুধু লেগে নেই আলোর আলিম্পন
ঘুম তখনো নুয়ান্স-
ক্লান্তির নিঃস্ব সহচর
মনে নেই চুম্বক, এডহেসিভ লেপ্টে ছিলো জাগরণের পয়ারে
জিরাফের সামর্থ্যের দিকে ছুটছে
পরম সকল মানুষের মন
ফানাফিল্লাহ
ডানা নেই বলে কিছু নেই
এই ভেবে বুকিফালা ফেলে গেছে তার প্রভুর ঘ্রাণ
পৃথিবীর হারেম-সরাই-বালাখানায়
পড়ে আছো দেখছেনা কেউ
আলেকজান্ডার
এই অলিভ রৌদ্রের নিচে রোদেলা ঘুমে, একা ও অবিকল।

Share.
Exit mobile version